Monday, April 25, 2011

গৃহস্থালি টিপস্

পাতিলেবুর খোসা না ফেলে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ডিটারজেন্টের সঙ্গে মিশিয়ে কাপড় ধুলে ভালো পরিষ্কার হবে এবং কাপড়ে সুন্দর গন্ধও হবে। িগুড়ো সাবানের সঙ্গে মিশিয়ে মাজলে বাসন ঝকঝকে হবে। িনিমকি, শিঙ্গাড়া, পরাটার ময়দা মাখার সময় লেবুর রস দিলে মচমচে হবে। িমাথায় খুশকি হলে ছানার পানির সঙ্গে পাতিলেবুর রস লাগান। সপ্তাহে অন্তত দু'দিন লাগাতে হবে। কিছুদিনের মধ্যেই খুশকি সেরে যাবে। িলেবু পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, রস বের করে আইস ট্রেতে জমিয়ে রাখুন। প্রয়োজন মতো ব্যবহার করতে পারবেন। িদেয়ালে অথবা দরজা-জানালার ফাঁকা অংশে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে রাখুন, ঘরে পিঁপড়ার উপদ্রব বন্ধ হবে।

ফাহমিদা আক্তার

গরমে থাকুন সুস্থ-সতেজ

গরমের দাবদাহ মানেই প্রচুর পিপাসা, ঘামানো, আহারে অরুচি আর ক্লান্তি। কি খাবেন, কেমন পোশাকে আরাম পাবেন, কি করলে এই গরমেও থাকবেন সুস্থ, সুন্দর, নির্মল তা নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। লিখেছেন _ খুরশীদা রহমান চৈতী



আমাদের বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। এখানে গ্রীষ্ম ঋতু দীর্ঘস্থায়ী হয়। এ সময় লাগাতার তাপ সহ্য করা ও সুস্থ থাকা খুবই কষ্টকর। গরমে সুস্থ থাকার জন্য একান্ত প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস। খাদ্য তালিকায় ভুল নির্বাচন বা অত্যাবশ্যক খাবারের অনুপস্থিতি আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে।


গরমে কি খাবেন বা কি এড়িয়ে চলবেন

প্রতিদিন অন্তত ২ থেকে আড়াই লিটার পানি পান করা।

তৈলাক্ত ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, রাস্তার খোলা খাবার বা পানীয় এড়িয়ে চলা ভালো। এসব খাবারে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। িগরমকাল মানেই ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির আদর্শ সময়। খাবার বা পানিবাহিত অসুখ, যেমন টাইফয়েড, জন্ডিস এসব অনাকাক্ষিত রোগ এসময় বেশি হয়। সে জন্যই রাস্তার শরবত, খোলা খাবার বা কাটা ফল খাওয়া উচিত নয়। িএকসঙ্গে বেশি পরিমাণ খাবার না খেয়ে বারবার অল্প পরিমাণে হালকা খাবার খাওয়া উচিত। িএ সময় শরীর থেকে ঘাম হয়ে শরীরের দরকারি লবণ-পানি ঝরে পড়ে। তাই গরমে মৌসুমি সবজি ও ফল যেমন- লাউ, পেঁপে, পটল, ঝিঙে বা তরমুজ, আম, জাম, জামরুল খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। সেই সঙ্গে ডাবের পানি, টাটকা ফলের রস, শসা বেশি করে খাওয়া দরকার। বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, শিম এড়িয়ে চলুন।

িটক দই অত্যন্ত উপকারী। গরমে নানাভাবে টক দই খাওয়া দরকার।

মোট কথা এমন খাবার বেছে নিন, যাতে ফাইবার, ক্লোরফিল, ওয়াটার কনটেন্ট, প্রচুর জলীয় উপাদান ও অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট বেশি থাকবে।

গরমে রূপচর্চা : ঘামে ভিজে মাথায় গন্ধ বা দিনের শেষে চটচটে চুল নিয়ে ঝামেলা লেগেই থাকে। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন ভালো শ্যাম্পু দিয়ে অবশ্যই চুল ধুয়ে নেবেন। মাসে দুবার চুলের প্রকৃতি অনুযায়ী কন্ডিশনিং করা জরুরি। টক দই, ডিম, মোসাম্বির রস, অল্প হেনা শিকাকাই, আমলকী-মেথি পাউডার, নারিকেল তেল দিয়ে একটা প্যাক বানান। ৪৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। শেষে আধা মগ পানিতে ১টি পাতিলেবুর রস ও অল্প ভিনেগার মিশিয়ে চুল ধুয়ে নিলে ঔজ্জ্বল্য বাড়বে। স্কিন ট্যান দূর করতে কমলালেবুর খোসা বাটা ও শসার রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। রোদ থেকে ফিরে শসার রস ও তরমুজের রস একসঙ্গে মিশিয়ে ১০ মিনিট লাগান। টক দই মুখে মেখে গোটা চিনি দিয়ে হালকা হাতে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। ত্বক পরিষ্কার রাখুন, তাতেই ৮০ ভাগ সমস্যা মিটে যাবে। রোদে বেরুনোর অন্তত ২০ মিনিট আগে অবশ্য সান ব্লক লোশন (জেল বেসড হলে ভালো) ব্যবহার করুন। গরমে ঘামের সঙ্গে তেল বেরোয় বেশি। ফলে ব্লাক, হেডস, হোয়াইট হেডস, ব্রণের সমস্যা বাড়ে। ত্বক পরিষ্কার রেখে নিযমিত ক্লিনজিং, টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং করা এবং ত্বক অনুযায়ী প্যাক লাগানো উচিত। গ্রিন-টি'র লিকার ঠাণ্ডা করে টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। অতিরিক্ত গরমে সিন্থেটিক পোশাক না পরাই ভালো, হালকা রং-এর সুতির নরম পোশাক পরাই ভালো। খুব টাইট,পা ঢাকা জুতা পরার চেয়ে খোলা স্যান্ডেল পরা ভালো। বাইরে বের হবার সময় সাথে ছাতা, সানগ্লাস এবং পানির বোতল নিতে ভুলবেন না।

চোখের যত্নে

কর্মব্যস্ত দিনে চোখে বেশি চাপ পড়ে। কারণ, কখনো কম্পিউটারের সামনে, কখনো টেলিভিশনের সামনে বা কখনো মনোযোগ দিয়ে কিছু পড়া হয়। এর মধ্যে চোখের বিশ্রামের কথা ভাবার অবকাশ হয় না। এ ছাড়া চোখ সাজানোর জন্য কত কিছুই তো করা হয়। কিন্তু বাড়ি ফিরে ভালোভাবে চোখ কি পরিষ্কার করা হয়?
হারমনি স্পার রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা বলেন, একনাগাড়ে কাজ করা উচিত নয়। বিশেষ করে কম্পিউটারে। সম্ভব হলে ১৫ মিনিট অন্তর অন্তর কিছুক্ষণ চোখ বুজে থাকুন। তা না করলে চোখে লাল হয়ে যায়। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। এগুলো ছাড়াও চোখে নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়। বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তবে প্রতিদিন যত্ন নিলে ছোট সমস্যাগুলো এড়ানো যায়। অফিসে বা বাড়িতে বসেই এ যত্ন নিতে পারেন। সে জন্য নানা পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ওয়াটার প্রুফ মাশকারা ও আইলাইনার খুব প্রয়োজন না হলে ব্যবহার না করাই ভালো। চোখের ভালো মানের কৃত্রিম পাপড়ি ব্যবহার করা উচিত। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। কাজের চাপ বেশি থাকলে চোখে কয়েক মিনিট আইকভার দিয়ে রাখতে পারেন। আইকভার না থাকলে নরম কাপড় দিয়ে চোখ ঢেকে রাখুন। এ ছাড়া বাইরে থেকে ফিরেই চোখে বেশি করে পানির ঝাপটা দেওয়া উচিত। এতে ধুলা-ময়লা সব পরিষ্কার হবে।
এবার তুলতে হবে চোখের মেকআপ। তুলায় বেবি অয়েল বা অলিভ অয়েল নিয়ে ধীরে ধীরে মেকআপ তুলুন। অনেকে অন্য কোনো প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহার না করলেও নিয়মিত কাজল ব্যবহার করেন। তাঁরা মনে করেন, এটি আবার তোলার কী আছে। এটি ভুল ধারণা। কাজলও ভালোভাবে তুলতে হবে। অলিভ অয়েল বা বেবি অয়েল তুলায় নিয়ে কাজল তুলতে পারেন। চোখের মেকআপ তোলার জন্য বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লিকুইড পাওয়া যায়। সেসবও ব্যবহার করতে পারেন। চোখের নিচে কালো দাগ থাকলে আন্ডারআই ক্রিম ব্যবহার করুন। চোখের ক্লান্তি কমাতে শসা বা আলুর রস তুলায় ভিজিয়ে চোখের ওপরে দিন। কয়েক মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। কাঁচা দুধের মধ্যে তুলা ভিজিয়েও চোখের উওপরে ১০ মিনিট রাখতে পারেন। ফ্রিজে রাখা ব্যবহূত টি-ব্যাগ চোখের চারপাশে ১০ মিনিট রেখে দিন। দেখবেন নিমেষেই ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে।
ছুটির দিনে বাড়িতে বসে চোখের উপযোগী প্যাক লাগাতে পারেন। টমেটোর রস, মসুর ডাল, গুঁড়া দুধ, মধু ও তিলের তেল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে পারেন। যাঁদের চোখ ফোলা থাকে, তাঁরা ত্রিফলার গুঁড়া, দুধ ও মধু মিশিয়ে হালকা করে মালিশ করুন। এতে চোখের ফোলাভাব কমে যাবে।
চোখের উপযোগী ব্যায়াম নিয়মিত করা উচিত। মাথা সোজা রেখে চোখ হাতের ডান থেকে বাঁয়ে ও বাঁ থেকে ডানে ১০ বার ঘোরাতে হবে। প্রতিদিন সম্ভব না হলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন করা যেতে পারে। রোদে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করুন। আর সানগ্লাস পরতে ভুলবেন না। সঙ্গে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। চোখের ক্লান্তি দূর করতে প্রকৃতির সবুজ রঙের জুড়ি নেই। একটু সময় পেলে সবুজে ঘেরা কোথা থেকে ঘুরে আসুন। মনও ভালো থাকবে, চোখও আরাম পাবে।

গরমে চুল বাঁধার ঢং

অসহ্য গরমে চুল খুলে রাখা বিপত্তিই। তবে কি কেটে ফেলবেন লম্বা চুলগুলো! তা কেন? জেনে নিন গরমে কীভাবে বেঁধে রাখবেন চুল। তাতে স্টাইলে কমতি হবে না একটুও।
চুল বাঁধার বেশ কয়েক ধরনের পদ্ধতির কথাও জানিয়েছেন হেয়ারোবিক্সের সৌন্দর্যবিষয়ক পরামর্শদাতা তানজিমা শারমিন।
গরমে একটু উঁচু করে চুল বাঁধতে চাইলে পনিটেল সবচেয়ে সহজ উপায়। অপেক্ষাকৃত গোল মুখের সঙ্গে পনিটেল বেশি ভালো লাগে। নানা নামে পনিটেলের আছে রকমফের।
সহজে এবং তাড়াতাড়ি চুল বাঁধার উপায় হলো পনিটেল। ছোট কাঁকড়া ক্লিপ বা পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে কিছু চুল আটকে পুরো চুলটা পনিটেল করে রাখা যায়। আবার সব চুল টেনে উঁচু করে পনিটেল করতে পারেন।


রিবন টুইস্ট
পুরো চুল আঁচড়ে মাথার একপাশে নিয়ে আসতে হবে। যে পাশে চুল থাকবে না, সেই পাশে পিন দিয়ে ভালোভাবে আটকে দিতে হবে।
এবার একপাশে আনা চুলগুলো রাবার ব্যান্ড দিয়ে পনিটেল করে নিতে হবে। পনিটেল করা চুলগুলো কালো ফিতা দিয়ে পেঁচিয়ে নিচের দিকের কিছুটা গোছা ছেড়ে রাখতে হবে। গরমের সময় সালোয়ার-কামিজ কিংবা পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে এই চুল বাঁধা খুব মানায়।


খোঁপা
যাঁদের চুল খুব বেশি লম্বা তাঁরা সহজেই করে ফেলতে পারেন খোঁপা।
অনেকেই কয়েক প্যাঁচ দিয়ে খোঁপা করে থাকেন। সুতি শাড়ির সঙ্গে এই খোঁপা খুব মানায়। খোঁপার পাশেই যদি গুঁজে দেওয়া যায় বেলি ফুলের মালা, তবে তো কথাই নেই। গরমে স্বস্তি আর ফ্যাশন হবে একই সঙ্গে। প্রয়োজন মনে করলে স্প্রে দিয়ে চুল আটকে নিন।